কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে দু’পক্ষের চলমান সংঘাতের তীব্রতা আগের চেয়ে আরও বহুগুণ বেড়ে গেছে। শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিক্ষেপ করা মর্টার শেল ও ভারী বোমার বিস্ফোরিত বিকট শব্দ গুলো ভেসে আসছে এপার সীমান্তে। এতে টেকনাফ উপজেলার পৌরসভা, সদর,সাবরাং, হ্নীলা ইউনিয়নের অন্তর্গত সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি এই সমস্ত এলাকায় বসবাসকারী নারী, শিশু, কিশোরদের মাঝে সবচেয়ে বেশি ভয়, ভীতি,আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক মাঝি শনিবার (২২জুন) বিকালের দিকে সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সেদেশের চলমান সংঘর্ষের তীব্রতা আগের চেয়ে দ্বীগুন আকার ধারণ করেছে। উক্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া দু’পক্ষের সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যসহ স্থানীয় রাখাইন নারী,পুরুষসহ অনেক রোহিঙ্গার প্রাণহানি ঘটেছে।
এদিকে শনিবার ভোর রাত থেকে সীমান্তের ওপার থেকে ভেসে আসা বিকট শব্দে টেকনাফ পৌরসভার নাফনদ সংলগ্ন বাসিন্দারা আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অত্র এলাকার অনেক নর-নারী শিশু, কিশোররা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
এবিষয়ে অভিমত প্রকাশ করে, টেকনাফ পৌরসভা ৯নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসহাক সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান,মিয়ানমারে গোলাগুলির ভেসে আসা বিকট শব্দে আমাদের পরিবারের সদস্যরা সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। শনিবার গভীর রাতে বেশ কয়েকটি বিকট শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মনে করেছিলাম ভুকম্পন হয়ে বাড়ি ঘর ঘর সব ভেঙ্গে গেছে। এর আগে এই রকম বিকট শব্দ আগে কখনো শুনিনি বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেই বিষয়টি আমাদের দেখার বিষয় নয়। তবে সেদেশের সংঘাতকে কেন্দ্র করে দেশের জলসীমা অতিক্রম করে কেউ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যরা কঠোর নজরদারি অবলম্বন করে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের সীমান্ত সু-রক্ষায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় করার জন্য বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলার দায়িত্বে থাকা ইউএনও আদনান চৌধুরী সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেছেন, গতকাল রাত থেকে মিয়ানমারে দু’পক্ষের গোলাগুলির কয়েকটি বিকট শব্দে শুনতে পেয়েছি। ভেসে আসা উক্ত শব্দ গুলো শুনে যেন এপার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদেরকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পাঠকের মতামত